click here

এই শীতে যেসব শিশুর জন্ম, তাদের যত্ন নেবেন কীভাবে

  শীতের দিনে নতুন শিশুর আগমন দুশ্চিন্তায় ফেলে দেয় বটে। তা ছাড়া এবার দেশে অস্বাভাবিক শৈত্যপ্রবাহ চলছে। কিন্তু এর মধ্যে তো থেমে নেই শিশুদের জন্ম। শীতের এই সময়টা নবজাতকের যত্নে খুবই সচেতন থাকতে হবে। কারণ, নবজাতক শিশুদের দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার সিস্টেম পাকাপোক্ত থাকে না। তাই যেকোনো সময় তীব্র শীতে তারা অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। হতে পারে হাইপোথার্মিয়া। মানে তাদের দেহের তাপমাত্রা কমে গিয়ে বিপত্তি ঘটতে পারে।

বাচ্চার বয়স ৪৫ দিন হওয়ার আগে বাচ্চাকে ন্যাড়া করার দরকার নেই। এই চুল বাচ্চার মাথার তাপমাত্রা ধরে রাখতে সাহায্য করেছবি: পেক্সেলস ডটকম

মাথা কামানোর দরকার নেই

আরেকটি কথা, বাচ্চার বয়স ৪৫ দিন হওয়ার আগে বাচ্চাকে ন্যাড়া করার দরকার নেই। এই চুল বাচ্চার মাথার তাপমাত্রা ধরে রাখতে সাহায্য করে। মাথার জন্মচুল পরিষ্কার করে দিলেই হলো। নবজাতককে শীতের সময় গরম রাখা খুবই জরুরি। শিশুকে কয়েক স্তরে দুই বা তিনটি সুতি জামা পরান। তারপর এর ওপর গরম উলের সোয়েটার পরান। তারপর আবার একটি সুতি কাপড়, উষ্ণ কাপড়, কম্বল বা তোয়ালে দিয়ে জড়িয়ে নিতে হবে। 


খেয়াল রাখবেন যেন ভেজা কাপড়ে না থাকে 


শিশুর মাথা ও কান ঢেকে রাখা জরুরি। নবজাতক শিশুরা অনেকবার প্রশ্রাব ও পায়খানা করে থাকে। খেয়াল রাখতে হবে বাচ্চা যেন ভেজা অবস্থায় থেকে না যায়। ডায়াপার বা ভেজা কাপড় দ্রুত সরিয়ে নিতে হবে বা পরিবর্তন করতে হবে। পায়খানা পরিষ্কারের সময় একটি সুতি কাপড় কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে নিয়ে পরিষ্কার করে পেট্রোলিয়াম জেলি (ভ্যাসলিন) ব্যবহার করবেন।




রোদে আর ওমে রাখুন


শরীর গরম রাখতে বিপাক ও পুষ্টির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। শিশুকে এক-দুই ঘণ্টা পরপর বুকের দুধ খাওয়াবেন। সূর্য উঠলে যতটা সম্ভব রোদে রাখবেন। সূর্য না উঠলে আর বাইরে বাতাস থাকলে ঘরের দরজা জানলা বন্ধ করে রাখবেন। 


এ সময় মুখমণ্ডল, বিশেষ করে চোখ ঢেকে রাখতে হবে।


বাচ্চাকে উষ্ণ রাখার সবচেয়ে ভালো উৎস হলো মায়ের কোলের ওম। অথবা যখন মায়ের কোলে থাকবে না, তখন দাদা-দাদি, নানা-নানির কোলের উষ্ণতায় দেহের সংস্পর্শে রাখতে পারলে ভালো। এতে করে বাচ্চার শরীরের তাপ হারানোর ঝুঁকি কম থাকে।

কানটুপি পরানোর অভ্যাস করুনছবি: পেক্সেলস ডটকম


সপ্তাহে দুদিন গোসল করালেই যথেষ্ট

এই শীতে নবজাতক শিশুকে গোসল করাবেন কি না, এ নিয়ে অনেকেই দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকেন। বাচ্চাকে শীতে প্রতিদিন গোসল করানোর প্রয়োজন নেই। দু-তিন দিন পরপর অথবা সপ্তাহে এক বা দুবার গোসল করানো যায়। গোসলের পরিবর্তে ভালোভাবে গা মুছে দিলেই চলবে।


গোসলের সময় প্রথমে একটি তুলা কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে চোখের চারপাশ, নাকের চারপাশ, কান ও গলা পরিষ্কার করে নেবেন। এরপর মাথা ধুয়ে দ্রুত মাথা মুছে ফেলতে হবে। তারপর পুরো শরীর ধুয়ে পরিষ্কার করতে হবে।


শীতে নবজাতক শিশুকে সপ্তাহে দুদিন গোসল করালেই যথেষ্টমডেল: রাবেয়া রাবু ও রোদসী, ছবি: সুমন ইউসুফ


বাচ্চাকে রোদে নিয়ে গিয়ে গোসল করাতে পারলে ভালো। যদি রোদ না থাকে বা বাইরে প্রচুর ঠান্ডা থাকে, সে ক্ষেত্রে গোসলের সময় ঘরের দরজা–জানালা বন্ধ করে ঘর গরম রাখবেন। গোসলের জন্য বাচ্চাদের উপযোগী সাবান বা বডিওয়াশ ব্যবহার করতে হবে।


 গোসলের আগে ও পরে অলিভ অয়েল দিয়ে ম্যাসাজ করে দিতে হবে। দ্রুত শিশুর শরীর মুছে শুকনা করে স্তরে স্তরে পোশাক পরিয়ে নিন। গোসলের আগে পানিতে আঙুল ডুবিয়ে উষ্ণতা পরীক্ষা করে নেবেন। এ সময় কিন্তু গরম পানিতে দুর্ঘটনা বেশি ঘটে। তাই এ ক্ষেত্রে খুব সাবধান।


লেখক: ডা. মো. শাহেদুর রহমান, আবাসিক চিকিৎসক, শিশু বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।



আরও পড়ুন

Comments

click here

Popular posts from this blog